Thursday, April 06, 2023

Scope and content of settlement geography (জনবসতি ভূগোলের Definition Scope ও Content)

Introduction

মানবীয় ভূগোলের জঠর থেকে উদ্ভূত ভূগোলের একটি নবীন শাখা হলো জনবসতি ভূগোল(settlement geography)। উনবিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধ থেকে এর যাত্রা শুরু হলেও এর প্রকৃত বিকাশ ঘটেছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে। দেরিতে বিকাশ লাভ করলেও এটি বর্তমানে মানবীয় ভূগোলের একটি অন্যতম ও দ্রুত বিকাশ শীল প্রাসঙ্গিক শাখা হিসেবে গড়ে উঠেছে। 


Definition aims and objectives

জনবসতি গুগলের প্রধান আলোচ্য বিষয় হলো জনবসতি যা বলতে বোঝায় ভূপৃষ্ঠের উপর মানুষের স্থায়ীভাবে বসবাস এবং এর বহিঃপ্রকাশ যা ঘরবাড়ি রাস্তাঘাট ইত্যাদি স্থাপনা দ্বারা তৈরি। প্রকৃতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার পথে মানুষের একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হলো বসতি নির্মাণ যা ভূপৃষ্ঠে মানুষের সাংস্কৃতিক ভূ দৃশ্যকে উপস্থাপন করে। মানুষ ও প্রকৃতির পারস্পরিক আন্ত-সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি অন্যতম প্রচেষ্টা হলো এই জনবসতি। তাই জনবসতি প্রকৃতি ও বৈশিষ্ট্য এই আন্তঃ সম্পর্ককে সব থেকে ভালোভাবে উপস্থাপন করে। Settlement is the concrete expression of human occupance of the Earth surface.

জনবসতির বাহ্যিক প্রকাশ (physical expression of settlement) সেই অঞ্চলের প্রাকৃতিক ও বসবাসকারী মানুষের সংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্যকে প্রকাশ করে। RY Sing এর ভাষায় বলা যায়, “ the settlement Geography is concerned with who build/ inhabit settlement, where and how”. এখানে who বলতে বোঝায় মানুষ হয় আর where বলতে ভূপৃষ্ঠের কোন স্থানকে বোঝায় এবং how বলতে বোঝায় ঐতিহাসিকভাবে এবং সাংস্কৃতিক বিবর্তনের বিভিন্ন সময়ে মানবজাতি কর্তৃক কিভাবে বসতি স্থাপিত হয়েছে তা। জনবসতির বাহ্যিক প্রকাশ, আভ্যন্তরীণ গঠন, বিভিন্ন উপাদানের মধ্যে আন্ত সম্পর্ক, বাড়ির কাঠামো ও প্রকাশ মানব সভ্যতার নানা বৈশিষ্ট্যকে প্রকাশ করে। উদাহরণ হিসেবে পৃথিবীর প্রাচীন জন বসতি হরপ্পা, মহেঞ্জোদারো, ইত্যাদির গঠন ও কাঠামো বিশ্লেষণ করে তাদের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অবস্থা সম্পর্কে ধারণা করা সম্ভব হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে সভ্যতার অগ্রগতির বিভিন্ন পর্যায়ে বিভিন্ন ধরনের বাহ্যিক বৈশিষ্ট্যযুক্ত জনবসতি গড়ে ওঠে। 

জনবসতির দুটি প্রধান ভাগ হলো গ্রামীণ ও পৌর বসতি। এই দুই ধরনের বসতির কাঠামোগত ও সামাজিক ও সাংস্কৃতিকভাবে পার্থক্য রয়েছে, তাই জনবসুতি ভূগোলে এই দুই প্রকার জনবসতি পৃথকভাবে আলোচনা করা হয় এবং এক্ষেত্রে আলোচনা পদ্ধতিগত পার্থক্য বিদ্যমান। তথাপি ভৌগোলিকদের কাছে জনবসতির একটি সামগ্রিক সত্তা এখনও রয়েছে। জনবসতিকে ভূপৃষ্ঠে মনুষ্য সৃষ্ট আশ্রয় বিবেচনা করে তারা এর বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য যেমন গৃহ, তার শিল্প- সুষমা, রাস্তাঘাট, তার গঠন বিন্যাস, ইত্যাদি সমুদয় বিষয়গুলি লক্ষ্য করেন। 

এর উদ্দেশ্য শুধুমাত্র বসতির আকার, গঠন ইত্যাদি সম্পর্কে নির্ণয় করা নয়, ঐতিহাসিক ঘটনার পরম্পরা ও কার্যকারণ সম্পর্কের উপর আলোকপাত করাও। তাই বলা চলে, বসতির আয়তন, আকার, কার্যাবলী ও উৎপত্তি জনবসতি ভূগোলের প্রয়োজনীয় উপাদান। অধিকন্তু আঞ্চলিক পার্থক্য ও কম গুরুত্বপূর্ণ নয় কারণ তা মানব গোষ্ঠীর অর্থনীতি ও সামাজিক অবস্থার প্রতিফলন।

Contents:

দুটি বিষয়: গ্রামীণ ও পৌর বসতি: যদিও জনবসতি বলতে পৌর ও গ্রামীণ উভয় জনবসতির কথাই বলা হয়, তথাপি জনবসতী ভূগোলে গত শতাব্দীর প্রথমার্ধ পর্যন্ত শুধুমাত্র শহর বা পৌর বসতি নিয়েই অধিক চর্চা হতো। অথচ পৃথিবীর মোট জনবসতির সিংহভাগ গ্রামীণ জনবসতি। তাই অনেক ভৌগোলিক, সমাজতত্ত্ববিদ গ্রামীণ জনবসতি ও তার সঙ্গে জড়িত সমস্যা নিয়ে আলোচনার উপর জোর দেন। এমনকি তারা এটাও মনে করিয়ে দেন যে জনবসতির প্রথম আত্মপ্রকাশ হয় গ্রামীণ বসতির মাধ্যমে এবং নগরায়ন প্রক্রিয়ার দ্বারা যে পৌর বসতির সৃষ্টি হয় তা জনবসতিরই আরেক রূপ। এমনকি ও পৃথিবীর উন্নত দেশে যেখানে নগরায়ন অধিক মাত্রায় হয়েছে সেখানেও গ্রামীণ বসতি লক্ষণীয়।

জনবসতির উৎপত্তি, বিকাশ, অবস্থান: তাই সামগ্রিকভাবে জনবসতি ভূগোলের আলোচনায় দরকার জনবসতির উৎপত্তি, অবস্থান (Site, Situation), আকার, আকৃতি ও গঠন, বাড়ির উপকরণ, বাড়ির গঠন, জনবসতীর কার্যাবলী, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য ইত্যাদি আলোচিত হয়। জনবসতীর অবস্থান, বসতবাড়ির নির্মাণ উপকরণ ইত্যাদি আলোচনার ক্ষেত্রে প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যের গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব এবং সেই সঙ্গে সাংস্কৃতিক যোগ যে গুরুত্বপূর্ণ তা আলোচনা করা জরুরী। 

কায়িক গঠন বিশ্লেষণ: আবার জনবসতির আকৃতিগত বিশ্লেষণ (Morphological Analysis) জরুরী ঐতিহাসিকভাবে মানুষের ভূপৃষ্ঠের উপরে অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা ও দক্ষতা বিষয়ে জানতে। জনবসতির আকৃতি, আকার, বিন্যাস, গৃহগঠন ইত্যাদি আকৃতিগত বিশ্লেষণ এর অন্তর্গত। জনবসতীর আঞ্চলিক পার্থক্য পাঠ ও আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। এটি সাহায্য করে কিভাবে বিভিন্ন প্রাকৃতিক ও আর্থসামাজিক পরিবেশে বিভিন্ন জনবসতি গড়ে ওঠে সেটা বুঝতে। 

জনবসতীর কার্যাবলী: জনবসতি ভূগোলের আলোচনায় আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হল জনবসতির কার্যাবলী। জনবসতীর সঙ্গে অর্থনৈতিক কার্যাবলী অঙ্গাঙ্গী ভাবে জড়িত এবং অর্থনৈতিক কার্যাবলী জনবসতির অবস্থান, বৃদ্ধি, কাঠামো ইত্যাদির উপর প্রভাব বিস্তার করে। এটি বসতির আর্থ-সামাজিক ও সংস্থা গত গঠন ও স্তরায়ন বুঝতে সাহায্য করে। তাছাড়া পাশাপাশি অবস্থিত বিভিন্ন আয়তনের বসতির মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক ও এই আলোচনার মাধ্যমে বোঝা যায়। প্রকৃতপক্ষে জনবসতি যে ক্রিয়া মুলক একটি একক হিসেবে কাজ করে এবং এটি একটি গতিশীল সত্তা হিসেবে ভূপৃষ্ঠে অবস্থান করে ও পরিবর্তিত হয় সেটা বোঝা যায়। 

সামাজিক বিশ্লেষণ: জনবসতির সামাজিক বিশ্লেষণ জনবসতি ভূগোলের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার বিষয়। বিশেষ করে পৌর বসতির মধ্যে সামাজিক স্তরবিন্যাসের সৃষ্টি ও বিবর্তন গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার দাবি রাখে। অতি সম্প্রতি শিল্পায়ন, প্রযুক্তির অস্বাভাবিক অগ্রগতি এবং অতি নগরায়নের ফলে পৌর বসতিতে আমূল পরিবর্তন এসেছে। তার কাঠামো, উলম্ব ও অনুভূমিক বিন্যাস, কার্যাবলী ইত্যাদি সব ক্ষেত্রেই এসেছে আমূল পরিবর্তন। বহুতল বাড়ি, বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে পৌর বসতির বিস্তার, ভূপৃষ্ঠে কংক্রিটের আচ্ছাদন, যথেষ্ট প্রাকৃতিক পরিবেশের অবক্ষয় ইত্যাদি ঘটেছে, ফলে সবুজ ধ্বংস, প্রাকৃতিক দূষণ, ভৌম জলের সংকট, পয়:প্রণালী ও পৃষ্ঠ প্রবাহের পরিবর্তন, ইত্যাদি এক্ষেত্রে আলোচনার কেন্দ্র হিসেবে উঠে এসেছে। 

Scope

মানুষের জনবসতি একটি জটিল আর্থসামাজিক ও প্রাকৃতিক আন্তঃক্রিয়ার ফল। এই জনবসতির মধ্যে তাই প্রাকৃতিক পরিবেশের ছাপ যেমন থাকে, তেমনি থাকে মানুষের সামাজিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক বিষয়ের প্রভাব। তাই জনবসতি ভূগোলের আলোচনায় উপরোক্ত সবগুলি বিষয়কে নিয়ে একটি সুসংহত ও সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে উঠেছে। সে দিক থেকে তাই জনবসতি ভূগোল কে একটি আন্ত-বিষয়ক (interdisciplinary) বিজ্ঞান বলা চলে। 

Approaches to study settlements:

জনবসতি ভূগোলের দৃষ্টিভঙ্গি আলোচনা প্রসঙ্গে জনবসতি কে কি কি ভাবে দেখা হয় এবং আলোচনা করা হয় সেটা জানা জরুরী এবং এটাকে বলে 'facets of study.' 

জনবসতি ভূগোলে জনবসতিকে যেভাবে গ্রহণ করে আলোচনা করা হয টা হল,

Settlement as a unit: এখানে একেকটি জনবসতি কে এক একটি একক হিসাবে ধরা হয়। সেখানে সেই জনবসতির বিভিন্ন উপাদান (গঠনগত ও কার্যগত), তাদের বিন্যাস এবং আন্ত সম্পর্ক গুরুত্বসহকারে আলোচিত হয়। যেমন ভৌগলিক Doxiadis জনগোষ্ঠীর চারটি উপাদান এর কথা বলেছেন যেগুলো হল, কেন্দ্রীয় অংশ, সমসত্ব অংশ, বৃত্তাকার অংশ এবং বিশেষ অংশ। 

ছবি: Parts of Settlement

Settlement as part of a system: একক হিসাবে ছাড়াও কোন একটি ভৌগোলিক এলাকাতে অবস্থিত অনেকগুলো জনবসতি কে একত্রে একটি সিস্টেম বা প্রণালী হিসেবে ধরা হয় যেখানে একেকটি জনবসতি সেই আঞ্চলিক জনবসতি প্রণালীর (regional settlement system) একটি উপাদান ধরা হয়।  

এখানে বলা হয় ভৌগলিক দেশ এর ওপর গড়ে ওঠা বিভিন্ন প্রকার জনবসতি যেমন ক্ষুদ্র গ্রাম থেকে শুরু করে বড় শহর ও নগর ইত্যাদি পরস্পর আন্ত: সম্পর্কযুক্ত এবং পরিবহন ব্যবস্থার মাধ্যমে এই সমস্ত জনবসতি গুলির মধ্যে সংযোগ রক্ষিত হয় ও প্রতিনিয়ত, যানবাহন, পণ্য ও মানুষের প্রবাহ চলে যা সেই জনবসতি ব্যবস্থা (settlement system) কে গতিশীল রাখে। এভাবে প্রতিটি জনবসতি যা ওই প্রণালীর অংশ, তা বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয় গঠনগত কার্যগত দিক দিয়ে এবং আঞ্চলিক জনবসতি ব্যবস্থা টিও ক্রমশ বৃদ্ধি পায়। জনবসতি ব্যবস্থার মধ্যে একটা ভারসাম্যহীনতা থাকে যার ফলে প্রতিনিয়ত তাদের মধ্যে নানা প্রবাহ চলে। Sumita Ghosh এর ভাষায় বলা যায়,

"Through the transfer of goods, services and people, the character of some settlement units may change, so that they grow or diminish in size and state. The total system therefore remains in a state of imbalance where there is a constant motion."

ছবি: Central Place System

Settlement as a landscape: পৃথিবী পৃষ্ঠের উপর বিভিন্ন প্রাকৃতিক বা সাংস্কৃতিক প্রক্রিয়াসমূহ যে সমস্ত বস্তুগত প্রকাশ ঘটায় তাকে এক কথায় ভূদৃশ্য বলে। মানুষের জনবসতি পৃথিবীপৃষ্ঠে তৈরি হওয়া সবথেকে বড় সাংস্কৃতিক ভূদৃশ্য যার নানা বৈশিষ্ট্য পৃথিবীর বিভিন্ন অংশে দেখা যায়। পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে নানা প্রাকৃতিক ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের কারণে জনবসতির ভূদৃশ্য গত বৈচিত্র চোখে পড়ে। এই ভূ দৃশ্যের মধ্যে মানুষের তৈরি বসতবাড়ি, রাস্তাঘাট, শিল্প-কলকারখানা, কৃষি জমি, ইত্যাদি থাকে যা ভূদৃশ্য বৈশিষ্ট্যকে দৃশ্যায়িত করে। 

এই ভূদৃশ্যের মধ্যে গ্রামীণ বসতির ভূদৃশ্য গত বৈচিত্র যেমন রয়েছে তেমনি রয়েছে শহর বসতির ভূদৃশ্য গত বৈচিত্র। 

Approaches:

গ্রামীণ ও নগর বসতি ভূদৃশ্য পৃথক ভাবে আলোচনার দাবি রাখে। 

জনবসতি ভূগোল এর আলোচনায় একাধিক দৃষ্টিভঙ্গি দেখা যায়। যেমন,

Descriptive: এখানে জনবসতিকে মূলত পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে তার বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করা হয় নানারকম তথ্য ও চিত্রের মাধ্যমে। এই বর্ণনাত্মক আলোচনায় বিশ্লেষণের জায়গা খুব কমই ছিল। যদিও ভূগোলে মাত্রিক বিপ্লবের সময় থেকে বর্ণনামূলক আলোচনা থেকে জনবসতি ভূগোল মাত্রিক বা পরিমাণগত এবং বিশ্লেষণাত্মক আলোচনার দিকে অগ্রসর হয়। 


Quantitative: ভূগোলে মাত্রিক বিপ্লবের হাত ধরে এই দৃষ্টিভঙ্গি জনবসতি ভূগোল প্রাধান্য বিস্তার করে এবং জনবসতির গঠনগত বিষয়ের বিশ্লেষণ ও আলোচনাতে পরিসংখ্যান এবং গাণিতিক পদ্ধতির ব্যবহার শুরু হয়। ফলস্বরূপ জনবসতি ভূগোল একটি নিয়ম স্থাপনকারী (nomothetic) বিজ্ঞানে পরিণত হয় অর্থাৎ সূত্র ও নিয়ম প্রতিষ্ঠা যার প্রধান লক্ষ্য হয়ে দাঁড়ায়। Christaller, Zipf, Losch, Zefferson প্রমুখ ভৌগলিক এর নাম এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে। 

 Humanistic: পরিমাত্রিক আলোচনার সমালোচনা করে জনবসতি ভূগোল এ মানবীয় দৃষ্টিভঙ্গি গুরুত্ব পায় যেখানে পর্যবেক্ষণকারী এবং পর্যবেক্ষিত বিষয়, অর্থাৎ জনবসতি এবং গবেষক উভয়ের ক্ষেত্রে ভাববাদী দৃষ্টিভঙ্গি প্রয়োগ করা হয়। বলা হয় জনবসতির বৈশিষ্ট্য কি হবে তা নির্ভর করে পর্যবেক্ষণকারী দৃষ্টিভঙ্গির উপর, অর্থাৎ তার ধারণা,জ্ঞান, মূল্যবোধ ইত্যাদির ওপর। এখানে জনবসতি নির্মাণে মানুষকে, অর্থাৎ ব্যক্তি মানুষ, সমাজবদ্ধ গোষ্ঠী মানুষ, প্রযুক্তিগত দক্ষতা উন্নত মানুষ ইত্যাদির ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া হয় এবং তার ওপর ভিত্তি করে জনবসতির বিভিন্ন দিক ব্যাখ্যা করা হয়।


Behavioral: পাশাপাশি আরেকটি যে দৃষ্টিভঙ্গি জনবসতি ভূগোলে আসে তাহলো আচরণবাদী দৃষ্টিভঙ্গি। এই দৃষ্টিভঙ্গিতে বিভিন্ন প্রাকৃতিক পরিবেশে মানুষের জনবসতি গড়ে ওঠার পেছনে মানুষের জটিল আচরণগত কারণ গুলি অনুসন্ধান করার মাধ্যমে সূত্র প্রতিষ্ঠা করার ওপর জোর দেয়া হয়। এক্ষেত্রে আচরণগত ম্যাট্রিক্স, মেন্টাল ম্যাপ ইত্যাদি ধারণা প্রাধান্য লাভ করে।

Radical: জনবসতি মানুষের সামাজিক সম্পর্কের আধার হিসেবে কাজ করে। তাই জনবসতির সামাজিক গুরুত্ব অস্বীকার করা যায় না। রেডিক্যাল ভৌগলিক এরা জনগোষ্ঠীর মধ্যে বিভিন্ন সামাজিক বৈষম্য, অর্থনৈতিক বৈষম্য, সামাজিক ও পরিবেশগত সমস্যা ইত্যাদির ওপর বেশি জোর দেয় এবং কিভাবে সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্য জনবসতির কাঠামোকে নিয়ন্ত্রণ করে তার উপর গুরুত্ব আরোপ করে।

Methods of study:

উপরিউক্ত দৃষ্টিভঙ্গি গুলি ছাড়াও জনবসতি ভূগোলের কিছু পদ্ধতিগত বিষয় রয়েছে। যেমন,

  • প্রণালীবদ্ধ পদ্ধতি ও 

  • আঞ্চলিক দৃষ্টিভঙ্গি

প্রণালীবদ্ধ দৃষ্টিভঙ্গিতে জনবসতিকে একটি একক বা একটি বৃহত্তর এককের অংশ হিসেবে ধরে তার নানা দিক বিশ্লেষণ করা হয় এবং জনবসতির বিভিন্ন অংশের মধ্যে যে আন্তঃ সম্পর্ক এবং তার মাধ্যমে যে প্রবাহ চলে তার মধ্য দিয়ে কিভাবে জনবসতি বিকশিত হয় এবং তার ক্রিয়াকর্ম পরিচালিত হয় সেটা আলোচনা করা হয়। 

আঞ্চলিক দৃষ্টিভঙ্গিতে জনবসতির উৎপত্তিগত বিবর্তন (Histogenesis), আকৃতি গত উৎস ও বিবর্তন (Morphogenesis), বিস্তার, বন্টন, বিন্যাস ও প্রকার এবং বৈশিষ্ট্য তুলনামূলকভাবে আলোচনা করা হয় বিভিন্ন ভৌগলিক এলাকার মধ্যে।

এছাড়াও জনবসতী ভূগোলে জনবসতির আলোচনায় আরো কয়েকটি দৃষ্টিভঙ্গির অধ্যয়ন করা হয়। 

Genetic: এক্ষেত্রে জনবসতির বিভিন্ন এলাকার উৎপত্তির ঐতিহাসিক ব্যাখ্যা খোঁজার চেষ্টা করা হয়। তাছাড়া জনবসতির বিবর্তন ও বিস্তারের উপর আলোকপাত করা হয়।

Spatial: এটি প্রকৃতপক্ষে প্রণালীবদ্ধ দৃষ্টিভঙ্গির অন্তর্ভুক্ত যেখানে জনবসতিকে একটি একক হিসেবে ধরে ভূপৃষ্ঠের উপরে তার আকার আকৃতি বিন্যাস গঠন এবং ক্রিয়াগত আন্ত সম্পর্ক নিয়ে আলোকপাত করা হয় এবং এর মাধ্যমে জনবসতীর কাঠাম মডেল প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করা হয়। 

Ecological: বাস্তুবিদ্যার প্রক্রিয়া সমূহকে জনবসতির গঠন বিন্যাস ও ক্রিয়া বিশ্লেষণে ব্যবহার করা হয়। কিভাবে জনবসতির পরিবর্তন সংঘটিত হয় তার ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করা হয় বাস্তুবিদ্যার বিভিন্ন নীতির দ্বারা- spread, invasion, competition, succession ইত্যাদি।

Relation with other disciplines: 

জনবসতি ভূগোলের আলোচনায় জনবসতির অঙ্গসংস্থানিক বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণে প্রাকৃতিক পরিবেশের প্রভাব অর্থাৎ জনবসতির Physical Location- Site এর ভূমিকা যেমন দেখা হয় তেমনি জনবসতির অর্থনৈতিক কাজকর্ম, সামাজিক দিক, সাংস্কৃতিক দিক ইত্যাদিও সমান গুরুত্ব সহকারে দেখা হয়। তাই জনবসতি ভূগোল এর পরিধি ভূগোলের অন্যান্য শাখার মধ্যেও প্রসারিত। এমনকি জনবসতির ঐতিহাসিক বিশ্লেষণে প্রত্নতত্ত্ব বিদ্যার সঙ্গে এর সম্পর্ক দেখা যায়। এছাড়া জনবসতির বাড়ি ঘরের নকশা আলোচনা তে যে সমস্ত আলোচনা গুলো করা হয় তা স্থাপত্যবিদ্যার সঙ্গে এর সম্পর্ক কে প্রতিষ্ঠা করে। তাই জনবসতি ভূগোলের পরিধি আলোচনা এর দৃষ্টিভঙ্গি, পদ্ধতি, ও অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে সম্পর্ক গুরুত্বপূর্ণ। 



No comments:

Post a Comment