পৃথিবীতে সত্যিই যা বদলাচ্ছে আর আমরা যেটা নিয়ে ভাবছি বা ভাবছিনা! –বড়ো ভাবনা ছোট ভাবনা!
ভূমিকা: আমরা বর্তমানে চিন্তিত, বিঘ্নিত!
পরিবেশ দুষণ!
বিশ্ব উষ্ণায়ন!
জলবায়ু পরিবর্তন!
ভুমি ক্ষয়!
জৈব বৈচিত্রের অবলুপ্তি!
ভৌম জলের ক্ষয়!
নদী দূষণ ও নদী মৃত্যু!
...........ইত্যাদি আরো কত উদ্বেগ!
আমরা কেউ কেউ সত্যিই উদ্বিগ্ন!
তবে আদৌ উদ্বিগ্ন নয় এরকম মানুষই সংখ্যাগরিষ্ঠ!
- এরা নিন্মবিত্ত (যাদের পরিবেশ নিয়ে উদ্বেগ না থাকাটাই স্বাভাবিক, কারন এদের জীবনযাত্রা খুব একটা প্রকৃতি বিরুদ্ধ নয়), তবে উৎপাদন ব্যবস্থায় (কৃষি, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ইত্যাদি) এদের অসচেতনতা ও গাম্ভীর্যতার অভাব অনেক ক্ষতিকর উপাদান মিশে যাচ্ছে খাবারে ও শরীরে!
- মধ্যবিত্ত (এরা অধিকাংশ আরাম ও ভোগবাদী জীবন প্রত্যাশী, তবে পরিবেশ নিয়ে যারা উদ্বিগ্ন তারা আবার এদের মধ্যেই পড়ে);
- উচ্চবিত্ত (এরা সংখ্যালঘু সেই জনসংখ্যা যাদের দ্বারা সব থেকে বেশি পরিবেশ ও প্রকৃতির ধ্বংস হয়ে চলেছে! নিজেদের ভোগবাদী ও সম্পদ অপচয়কারী জীবন যাত্রা নূন্যতম পরিবর্তন না করে এরা পরিবেশ সুরক্ষার নাটক করে!)
পৃথিবী যে বদলাচ্ছে সেটা কিন্তু পরিষ্কার আমাদের উদ্বেগ থেকেই আর পৃথিবী বা পরিবেশ যে খুব সোজা সাপটা সেটাও বুঝলম আমরা কোভিড-১৯ মহামারীর কল্যাণে।
একবার Covid -19 সময়ের সঙ্গে তুলনা টেনে দেখি:
শহরে বিষাক্ত বাতাসে মুক্ত শ্বাসের আস্বাদ!
দুর্গন্ধ গুলো কেমন কমে এসেছিল;
দূষিত হ্রদ/নদীর জল পরিষ্কার!
পরিযায়ী পাখির আনাগোনা বিষাক্ত জলাশয়ে;
প্লাস্টিক ও পলিথিন এর স্তূপ কমে এসেছিল।
গত দুশো বছরে আমাদের ব্যবহারে কি কি পরিবর্তন এসেছে:
- অতিরিক্ত জনসংখ্যা (সব দেশের জন্য প্রযোজ্য নয়),
- মাটি ও সবুজের বিনিময়ে নগর বসতি- (ক্রমশ প্রকৃতি থেকে বিচ্ছিন্ন এক প্রাধান্য বিস্তারকারী জনসংখ্যা!);
- নীচু জলাশয় এর সংখা হ্রাস,
- প্লাস্টিক, পলিথিন, নাইলন ইত্যাদি নতুন পদার্থের প্রবেশ;
- বিষাক্ত রাসায়নিক - শিল্প- কারখানা, কৃষি ও গৃহস্থালি থেকে,
- নতুন নতুন ক্ষতিকারক গ্যাসের অনুপ্রবেশ;
- ভৌম্ জলের ব্যবহার বৃদ্ধি -(কৃষি উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে, জনাকীর্ণ নগর বসতিতে, শিল্পে...)
- ক্রম বর্ধমান জীবাশ্ম জ্বালানি দহন (শিল্প, বিদ্যুৎ শিল্প, পরিবহন ইত্যাদি);
- বিদ্যুৎ ও বিদ্যুৎ চালিত জীবন সহজকারী ও আরাম-বিনোদন প্রদানকারী যন্ত্রের ব্যবহার;
- বৈষয়িক সুখের বৃদ্ধি - ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিক্সের গুণোত্তর হারে উৎপাদন ও ব্যবহার বৃদ্ধি;
- নতুন নতুন তেজষ্ক্রিয় ধাতব উপাদানের আবির্ভাব- (ইলেকট্রনিক্স যন্ত্র থেকে) ইত্যাদি!
- সীমাহীন লোভ!
- ক্ষমতার আস্ফালন (অকারন যুদ্ধ, মহাকাশ বিজয়!)
বি: দ্র:
- আমরা আমাদের আরাম বাড়িয়েছি। তাই প্রাকৃতিক সহ্যক্ষমতা কমেছে। (গরম, অস্বস্তি ইত্যাদি বেশি লাগছে।) ১০০ বছর আগেও কিন্তু গরম পড়ত!
- তারসঙ্গে সবুজ প্রাকৃতিক জঙ্গল বদলে হয়েছে কংক্রিটের জঙ্গল - অস্বস্তি বাড়বে না??
তবে সত্যিই কিন্তু পরিবেশ বদলাচ্ছে!
- আমাদের কৃত কর্মের জন্য বদলাচ্ছে!
- বদলাচ্ছে প্রাকৃতিক বাসস্থান (Habitat),
- প্রভাবিত হচ্ছে প্রকৃতির বুকে অসংখ্য ক্ষুদ্র থেকে বৃহৎ জীবের ভবিষ্যত!
- বদলাচ্ছে আমাদের চারপাশ - গোচরে অগোচরে।
আমরা কি ভাবছি?? প্রকৃত সমাধান! নাকি সহজলভ্য যোগাড়?
- শুধু আমাদের স্বাচ্ছন্দের যোগাড়? (প্লাস্টিক ও পলিথিন এখন বিপর্যয় অসচেতন অধিক জনসংখ্যার দেশে- ভারত)
- প্রকৃতি থেকে বিচ্ছিন্ন থেকে সমাধান? (ক্রমবর্ধমান বাতানুকুল যন্ত্র; বহুতলে অনিয়ন্ত্রিত ভৌমজল ব্যবহার অথচ বৃষ্টির জল সংরক্ষণে নেই পদক্ষেপ!)
- প্রকৃতির জীবদের প্রতি একটু আদটু করুণা? (জৈব বৈচিত্র্য সংরক্ষণ!)
আমাদের বিকল্প কি?
- সৌরবিদ্যুৎ সত্যিই প্রকৃত ভবিষ্যৎ বিকল্প? (পরিত্যক্ত সৌর প্যানেলের অব্যবস্থাপনা (যেমন, পলিথিন) আরও বড় বিপর্যয় ডেকে আনবেননা তো?)
- ব্যাটারি চালিত বৈদ্যুতিন গাড়ি সত্যিই পরিববেশ বান্ধব? (গবেষণা অন্য কথা বলছে! তাছাড়া বিপুল ব্যাটারি ও তার পরিত্যক্ত রাসায়নিক ও তেজষ্ক্রিয় উপাদান ভবিষ্যত্ বিপর্যয় আনবে নাতো?)
- সবুজ হীন কংক্রিটের নগরে বাতানুকুল যন্ত্র সত্যিই সমাধান?
তাহলে প্রকৃত সমাধান কি?
- অনাকাঙ্ক্ষিত ও বহিরাগত পদার্থ ও বস্তু এবং সংশ্লিষ্ট শিল্প পরিত্যাজ্য!
- কংক্রিট ও সবুজের সহাবস্থান হোক!
- নদী বাঁচুক,
- জলাশয় বাঁচুক,
- গাছ হোক সঙ্গী!
- কৃষি হোক জৈব!
- বন্ধ হোক সম্পদের অপচয় ও অতি ব্যবহার!
- বন্ধ হোক অনাকাঙ্ক্ষিত ও বহিরাগত পদার্থ উৎপাদক শিল্প,
- অপ্রয়োজনীয় আরাম ও বিনোদন প্রদায়ী দ্রব্য হোক নিয়ন্ত্রিত,
- পুনর্ব্যবহার হোক যত ধতব যন্ত্রাংশ।
পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের আদিবাসীদের কে শোনো!
ওদের পরিবেশ ভাবনা ও জীবনশৈলী বোঝার চেষ্টা কর।
হয়তো ওদের জীবনযাত্রায় লুকিয়ে আছে প্রকৃত সমাধান!